Mohammad Shamsuddoha Sir just share this post in His facebook , I Am sharing the post to build awareness:
December 25, 2013
বাংলাদেশে তিন দিনের অবস্থানের সব চাইতে খারাপ অভিজ্ঞতা হচ্ছে আমাদের ফেমিলি ব্যবসা পোলট্রি শিল্পের শোচনীয় অবস্থা দেখে। কথায় আছে যার যায়, সে বুঝে, আরেক জন সে যন্ত্রনার কি বুঝবে? সেই ১৯৮৬ সাল থেকে বাবার হাত ধরে এগ্রো ব্যাবসায় পথ চলা শুরু আমাদের দুই ভাইয়ের। শত দুঃখ কষ্টে এটাকেই সাথে রেখেছি।'entrepreneurship development' একটা কোর্স বিবিএ তে পড়েছিলাম। কিন্তু প্রাক্টিক্যালি আমার নিজের ভাইকে দেখেছি কি মনোবল, আর সাহস আর উদ্ধমতা থাকলে মানুষ সত্যিকার entrepreneur হতে পারে। যে পারে, সে সব পারে। এই মানুষটার উপকার নেয়নি এমন কোন মানুষ আমাদের এলাকায় পাওয়া দুস্কর। কার রক্ত লাগবে, কার গাড়ী লাগবে, কে মারা গেল, কে অসুস্থ হোল, কার বিয়ে, কার সময় লাগবে। ওইখানে সে হাজির। আল্লাহ এই ধরনের মানুষকে সমাজে রেখেছে বলে অনেকের রুটি রুজির ব্যাবস্থা হয়। যাই হউক, পোলট্রি ব্যাবসার কথা বলছিলাম। আমাদের ব্যাবসার মুল পণ্য হচ্ছে একদিনের ব্রয়লার চিক্স। একটা বাচ্চা উৎপাদনে নাকি এখন ৪০-৫২ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। ৩-৪ বছর আগেও সেটা ২৫ টাকার মাঝে ছিল। সেটা এখন ইতিহাস। দেশের পলিটিক্স এর কারনে এই শিল্প অনেক লোকশান দেয়। এটা একটা ব্যাবসা যেটা লাইভ নিয়ে ডিল করে। চাইলে মুরগিকে বলতে পারবে না কেউ, আজ ডিম পারিস না। আজ ডিমটা সাপ্লাই দিতে পারব না। পারা গেলে ভাল হতো। ৭-৮ লক্ষ্ প্রডাকশন নিয়ে যদি হরতাল, অবরোধের কারনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে না পাঠাতে পারে, তাহলে বাচ্চা গুলাকে বার্ন করে ফেলতে হয়। একবার ভাবুন, ৮ লক্ষ কে ৪০-৫২ দিয়ে গুন করে, কত লস হচ্ছে। এখন কিন্তু কেউ চিল্লাচ্ছে না, মুরগি আর ডিমের দাম নিয়ে। এই কোটি কোটি টাকা লস কি সরকার বা বিরুধি দল ভরবে? কেউ ভরবে না। এইভাবে, পারলে টিকে থাক না হয় ফুট। এই হচ্ছে আমাদের সোনার বাংলার প্রতি দরদ। চাঁদাবাজি করতে কাউকে শিখাতে হয় না। মন্ত্রী, এম,পি, নেতা, ব্যাঙ্ক, পুলিশ, ট্যাক্স অফিস সবাইকে সামাল দিতে হয়। যে বান্দারা আগে গরুর মাংস আর মুরগিরমাংস একই দামে খেতেন, ওঁরা কথা বলে না। এটা দেশিয় শিল্প, তাই আবদার বেশী এটার উপর। আর গরু আসে ৫০% বাইরে থেকে, ওইটার কস্টিং সবাই বুঝে। আমার কথা হোল, অতি দামের ও দরকার নাই কিংবা লসের ও দরকার নাই। এই হচ্ছে আমার কস্টিং, এই মারজিন মুনাফা দিলে শিল্প বাচবে। আর না হয় হবে না। এইটা হচ্ছে একটা শিল্পের কথা। যতরকম ব্যাবসা পচনশিল পণ্য নিয়ে, সবার চোখের পানি ধরে রাখতে পারছে না। দুধ, সবজি সহ সব কাচামালের একই অবস্থা। এখন আর কারো কাছ থেকে কিছু আশা করি না যে কেউ দেখবে এইসব। সবাই ক্ষমতা, চেতনা আর স্বপ্ন নিয়ে থাকলেই দেশের সবার পেট ভরবে। ভরছেত? আর না হয় এতো সম্পদ গড়ে কি করে মানুষ? অবাক বিশ্ব তাকিয়ে দেখ, আমরা সব সহ্য করতে পারি! সেটা নিজের জানের বিনিময়ে হলেও। কোন প্রত্যাশা আজ আর নাই। শুধু নিজের ক্ষোভের কথা নিজের ওয়াল এ লিখাই আমার ক্ষমতা আর তাই করে দেখালাম, এর বেশী কিছু ক্ষমতা আমার নাই।
http://www.poriborton.com/article_details.php?article_id=42093
এদিকে হুমকির মুখে পড়া দেশের পোল্ট্রিশিল্পকে রক্ষার্থে আগামী ২৬ ডিসেম্বর সকাল ১০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘সেভ দ্য চিকেন’ শিরোনামে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেছে কো-অর্ডিনেশন কমিটি-বিপিআইসিসি। স্মরণকালের সবচেয়ে বড় মানববন্ধনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সংহিসতার প্রতিবাদ ও এসব বন্ধের দাবি জানানো হবে বলে জানিয়েছে বিপিআইসিসি।
বিপিআইসিসি বলেছে, “চরম বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশের পোল্ট্রি শিল্প। রাজনৈতিক অস্থিরতা, সহিংসতা, হরতাল আর অবরোধের কারণে জীবন-মৃত্যুর অনিশ্চিত এক পথের বাঁকে বেঁচে থাকার শেষ অবলম্বন খুঁজে ফিরছেন বাংলাদেশের প্রায় ৭০ লাখ খামারি। এ পর্যন্ত পোল্ট্রিশিল্পে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছে। কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রতি দিন হারিয়ে যাচ্ছে মূলধন। ইতোমধ্যে সারাদেশে প্রায় ৩০ হাজার খামার বন্ধ হয়ে গেছে। যারা এখনো টিকে আছেন তাদের প্রায় সবাই ঋণের দায়ে সর্বস্ব হারাতে বসেছে। অমিত সম্ভাবনাময় যে শিল্পটি জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখার পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে শুরু করেছিল তা আজ এক মৃতপ্রায় শিল্পে পরিণত হয়েছে।”
বিপিআইসিসি জানায়, বিগত প্রায় তিন মাসে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পোল্ট্রিশিল্পে লোকসানের পরিমাণ চার হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। তাই জীবন বাঁচানোর তাগিদে সরকার ও বিরোধীদলগুলোর প্রতি রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধ করে সুস্থ-স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানাচ্ছে বিপিআইসিসি।
বিপিআইসিসি আরো জানায়, চলমান রাজনৈতিক সংকটের কারণে ব্রয়লার মুরগির দাম গত ৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। খামারিকে ৭০-৮০ টাকা দরে মুরগি বিক্রি করতে হচ্ছে, যেখানে ন্যূনতম উৎপাদন খরচ ১১০-১২০ টাকা। একদিন বয়সী ব্রয়লার বাচ্চার ন্যূনতম উৎপাদন খরচ ৩৫ টাকা, অথচ তা বিক্রি করতে হচ্ছে গড়ে প্রায় ১৫-২০ টাকায়। প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ ৬ টাকা হলেও তা খামার পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫ টাকায়।
প্রতি সপ্তাহে ফ্যাক্টরিতে উৎপাদিত ফিডের চাহিদা প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন। বিগত প্রায় তিন মাসে স্বাভাবিক উৎপাদন-চাহিদা ছিল প্রায় ৬ লাখ টন। যার দাম প্রায় ২৪ শত কোটি টাকা। হরতাল অবরোধের কারণে এ খাতে ৩৫-৪০ শতাংশ চাহিদা কমে গেছে। লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০০০ কোটি টাকা।
প্রতিদিন দেশে গড়ে প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ পিস ডিম উৎপাদিত হয় অর্থাৎ সাপ্তাহিক উৎপাদন প্রায় ১০ কোটি ৫০ লাখ পিস। হরতাল-অবরোধজনিত কারণে নষ্ট হচ্ছে ৩০ শতাংশ বা ৩ কোটি ১৫ লাখ পিস ডিম- যার উৎপাদন খরচ প্রায় ২০ কোটি ৪৭ টাকা (প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ ৬ টাকা)। ১৩ সপ্তাহে ক্ষতি প্রায় ২৬৬ কোটি টাকা।
অবশিষ্ট ৭০ শতাংশ ডিম খামারিকে বিক্রি করতে হয়েছে গড়ে প্রায় ৫ টাকা দরে। প্রতিটি ডিমে খামারির লোকসান এক টাকা। সাপ্তাহিক লোকসান প্রায় ২৮ কোটি টাকা। তিন মাসে লোকসান ৩৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ শুধুমাত্র এ খাতে বিগত তিন মাসে লোকসান হয়েছে প্রায় ৬৩০ কোটি টাকা।
প্রতি সপ্তাহে ব্রয়লার বাচ্চা (ডিওসি) উৎপাদিত হচ্ছে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ। হরতাল-অবরোধের কারণে অবিক্রিত থেকে যাচ্ছে প্রায় ৩০ শতাংশ বাচ্চা- যার সংখ্যা প্রায় ৩৬ লাখ পিস এবং উৎপাদন খরচ প্রায় ১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। অর্থাৎ বিগত তিন মাসে ক্ষতি প্রায় ১৬৪ কোটি টাকা।
অবশিষ্ট ৭০ শতাংশ বাচ্চা বিক্রি করে সরাসরি লোকসান গুণতে হচ্ছে বাচ্চা প্রতি গড়ে প্রায় ২০ টাকা হিসেবে। অর্থাৎ বাচ্চা বিক্রি থেকে প্রতি সপ্তাহে লোকসান হচ্ছে প্রায় ১৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। বিগত প্রায় ১৩ সপ্তাহে এ ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২১৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ বাচ্চায় মোট লোকসানের পরিমাণ ৩৮২ কোটি টাকা।
বাণিজ্যিক ব্রয়লার মুরগির মাংসের মাসিক উৎপাদন প্রায় ৬০ হাজার টন। তিন মাসে উৎপাদন ১৮০ হাজার টন। এ খাতে মোট লোকসানের প্রমাণ ৯৭৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশের পোল্ট্রি সেক্টরে প্রতি মাসে ঔষদের বাজার প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। বর্তমানে এ বাজার প্রায় ৬৩ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছে। গত তিন মাসে এ খাতে লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫৮ কোটি টাকা।
অর্থাৎ ডিম, বাচ্চা, মুরগি, ফিড এবং ওষুধ এই খাতগুলোতে বিগত প্রায় তিন মাসের রাজনৈতিক অস্থিরতায় লোকসান হয়েছে প্রায় ৩১৪৫ কোটি টাকা। এর সাথে যুক্ত হয়েছে ব্যাংকের সুদ, লজিস্টিক খরচ, বন্দর ডেমারেজ, গাড়ি ভস্মীভূত হওয়াসহ অন্যান্য লোকসান- যা যোগ করলে মোট লোকসানের পরিমাণ ৪ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়।
বিপিআইসিসির আহ্বায়ক মসিউর রহমান বলেন, ''পোল্ট্রি শিল্প রক্ষায় গণমাধ্যমের সহযোগিতা আজ আমাদের খুব বেশি প্রয়োজন। আমাদের কথা, আমাদের প্রকৃত অবস্থা রেডিও, টিভি, সংবাদপত্রের মাধ্যমে দয়া করে তুলে ধরুন। কারণ পোল্ট্রি শিল্প ধ্বংস হলে দরিদ্র ও বেকারত্ব বাড়বে, গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে, স্বাস্থ্যহীন ও অপুষ্টির শিকার মা ও শিশুর সংখ্যা বাড়বে, খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে, মেধার বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে।''
বিবিপিআইসিসির পক্ষ থেকে প্রতিটি বড় কোম্পানি থেকে কমপক্ষে ১০০জন, মাঝারি কোম্পানি থেকে ৫০জন এবং ছোট কোম্পানি থেকে ২৫জন করে প্রতিনিধি মানববন্ধনে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে তাদের স্ব-স্ব হ্যাচারি মালিক এবং খামারিদের কমপক্ষে ২টি করে মুরগি, কিছু সংখ্যক মুরগির বাচ্চা ও ডিম নিয়ে কর্মসূচিতে অংশ্রগ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
December 25, 2013
বাংলাদেশে তিন দিনের অবস্থানের সব চাইতে খারাপ অভিজ্ঞতা হচ্ছে আমাদের ফেমিলি ব্যবসা পোলট্রি শিল্পের শোচনীয় অবস্থা দেখে। কথায় আছে যার যায়, সে বুঝে, আরেক জন সে যন্ত্রনার কি বুঝবে? সেই ১৯৮৬ সাল থেকে বাবার হাত ধরে এগ্রো ব্যাবসায় পথ চলা শুরু আমাদের দুই ভাইয়ের। শত দুঃখ কষ্টে এটাকেই সাথে রেখেছি।'entrepreneurship development' একটা কোর্স বিবিএ তে পড়েছিলাম। কিন্তু প্রাক্টিক্যালি আমার নিজের ভাইকে দেখেছি কি মনোবল, আর সাহস আর উদ্ধমতা থাকলে মানুষ সত্যিকার entrepreneur হতে পারে। যে পারে, সে সব পারে। এই মানুষটার উপকার নেয়নি এমন কোন মানুষ আমাদের এলাকায় পাওয়া দুস্কর। কার রক্ত লাগবে, কার গাড়ী লাগবে, কে মারা গেল, কে অসুস্থ হোল, কার বিয়ে, কার সময় লাগবে। ওইখানে সে হাজির। আল্লাহ এই ধরনের মানুষকে সমাজে রেখেছে বলে অনেকের রুটি রুজির ব্যাবস্থা হয়। যাই হউক, পোলট্রি ব্যাবসার কথা বলছিলাম। আমাদের ব্যাবসার মুল পণ্য হচ্ছে একদিনের ব্রয়লার চিক্স। একটা বাচ্চা উৎপাদনে নাকি এখন ৪০-৫২ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। ৩-৪ বছর আগেও সেটা ২৫ টাকার মাঝে ছিল। সেটা এখন ইতিহাস। দেশের পলিটিক্স এর কারনে এই শিল্প অনেক লোকশান দেয়। এটা একটা ব্যাবসা যেটা লাইভ নিয়ে ডিল করে। চাইলে মুরগিকে বলতে পারবে না কেউ, আজ ডিম পারিস না। আজ ডিমটা সাপ্লাই দিতে পারব না। পারা গেলে ভাল হতো। ৭-৮ লক্ষ্ প্রডাকশন নিয়ে যদি হরতাল, অবরোধের কারনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে না পাঠাতে পারে, তাহলে বাচ্চা গুলাকে বার্ন করে ফেলতে হয়। একবার ভাবুন, ৮ লক্ষ কে ৪০-৫২ দিয়ে গুন করে, কত লস হচ্ছে। এখন কিন্তু কেউ চিল্লাচ্ছে না, মুরগি আর ডিমের দাম নিয়ে। এই কোটি কোটি টাকা লস কি সরকার বা বিরুধি দল ভরবে? কেউ ভরবে না। এইভাবে, পারলে টিকে থাক না হয় ফুট। এই হচ্ছে আমাদের সোনার বাংলার প্রতি দরদ। চাঁদাবাজি করতে কাউকে শিখাতে হয় না। মন্ত্রী, এম,পি, নেতা, ব্যাঙ্ক, পুলিশ, ট্যাক্স অফিস সবাইকে সামাল দিতে হয়। যে বান্দারা আগে গরুর মাংস আর মুরগিরমাংস একই দামে খেতেন, ওঁরা কথা বলে না। এটা দেশিয় শিল্প, তাই আবদার বেশী এটার উপর। আর গরু আসে ৫০% বাইরে থেকে, ওইটার কস্টিং সবাই বুঝে। আমার কথা হোল, অতি দামের ও দরকার নাই কিংবা লসের ও দরকার নাই। এই হচ্ছে আমার কস্টিং, এই মারজিন মুনাফা দিলে শিল্প বাচবে। আর না হয় হবে না। এইটা হচ্ছে একটা শিল্পের কথা। যতরকম ব্যাবসা পচনশিল পণ্য নিয়ে, সবার চোখের পানি ধরে রাখতে পারছে না। দুধ, সবজি সহ সব কাচামালের একই অবস্থা। এখন আর কারো কাছ থেকে কিছু আশা করি না যে কেউ দেখবে এইসব। সবাই ক্ষমতা, চেতনা আর স্বপ্ন নিয়ে থাকলেই দেশের সবার পেট ভরবে। ভরছেত? আর না হয় এতো সম্পদ গড়ে কি করে মানুষ? অবাক বিশ্ব তাকিয়ে দেখ, আমরা সব সহ্য করতে পারি! সেটা নিজের জানের বিনিময়ে হলেও। কোন প্রত্যাশা আজ আর নাই। শুধু নিজের ক্ষোভের কথা নিজের ওয়াল এ লিখাই আমার ক্ষমতা আর তাই করে দেখালাম, এর বেশী কিছু ক্ষমতা আমার নাই।
http://www.poriborton.com/article_details.php?article_id=42093
উঠতি পোল্ট্রিশিল্প অবরোধে মৃতপ্রায়
পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ কো-অর্ডিনেশন কমিটির (বিপিআইসিসি) আহ্বায়ক মসিউর রহমান বলেন, “দেশের বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পোল্ট্রিশিল্প আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। খামারে খাদ্য নেই, উত্তাপের জ্বালানি নেই, ফিড উৎপাদনের কাঁচামাল নেই, যানবাহনের নিরাপত্তা নেই, বিক্রি নেই, ব্যবসা নেই। প্রতিদিনের লোকসানে পথে বসতে চলেছে খামারি ও বিনিয়োগকারিরা।''
তিনি বলেন, ''ধ্বংসাত্মক রাজনীতির বলি হতে হচ্ছে যুগ যুগ ধরে অতিকষ্টে গড়ে তোলা বাংলাদেশের পোল্ট্রিশিল্প। যেভাবেই হোক পোল্ট্রিশিল্পকে রক্ষা করতে হবে। তাই জোড়ালো প্রতিবাদ জানাতে হবে। রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধ করে ব্যবসার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।”এদিকে হুমকির মুখে পড়া দেশের পোল্ট্রিশিল্পকে রক্ষার্থে আগামী ২৬ ডিসেম্বর সকাল ১০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘সেভ দ্য চিকেন’ শিরোনামে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেছে কো-অর্ডিনেশন কমিটি-বিপিআইসিসি। স্মরণকালের সবচেয়ে বড় মানববন্ধনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সংহিসতার প্রতিবাদ ও এসব বন্ধের দাবি জানানো হবে বলে জানিয়েছে বিপিআইসিসি।
বিপিআইসিসি বলেছে, “চরম বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশের পোল্ট্রি শিল্প। রাজনৈতিক অস্থিরতা, সহিংসতা, হরতাল আর অবরোধের কারণে জীবন-মৃত্যুর অনিশ্চিত এক পথের বাঁকে বেঁচে থাকার শেষ অবলম্বন খুঁজে ফিরছেন বাংলাদেশের প্রায় ৭০ লাখ খামারি। এ পর্যন্ত পোল্ট্রিশিল্পে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছে। কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রতি দিন হারিয়ে যাচ্ছে মূলধন। ইতোমধ্যে সারাদেশে প্রায় ৩০ হাজার খামার বন্ধ হয়ে গেছে। যারা এখনো টিকে আছেন তাদের প্রায় সবাই ঋণের দায়ে সর্বস্ব হারাতে বসেছে। অমিত সম্ভাবনাময় যে শিল্পটি জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখার পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে শুরু করেছিল তা আজ এক মৃতপ্রায় শিল্পে পরিণত হয়েছে।”
বিপিআইসিসি জানায়, বিগত প্রায় তিন মাসে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পোল্ট্রিশিল্পে লোকসানের পরিমাণ চার হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। তাই জীবন বাঁচানোর তাগিদে সরকার ও বিরোধীদলগুলোর প্রতি রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধ করে সুস্থ-স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানাচ্ছে বিপিআইসিসি।
বিপিআইসিসি আরো জানায়, চলমান রাজনৈতিক সংকটের কারণে ব্রয়লার মুরগির দাম গত ৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। খামারিকে ৭০-৮০ টাকা দরে মুরগি বিক্রি করতে হচ্ছে, যেখানে ন্যূনতম উৎপাদন খরচ ১১০-১২০ টাকা। একদিন বয়সী ব্রয়লার বাচ্চার ন্যূনতম উৎপাদন খরচ ৩৫ টাকা, অথচ তা বিক্রি করতে হচ্ছে গড়ে প্রায় ১৫-২০ টাকায়। প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ ৬ টাকা হলেও তা খামার পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫ টাকায়।
প্রতি সপ্তাহে ফ্যাক্টরিতে উৎপাদিত ফিডের চাহিদা প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন। বিগত প্রায় তিন মাসে স্বাভাবিক উৎপাদন-চাহিদা ছিল প্রায় ৬ লাখ টন। যার দাম প্রায় ২৪ শত কোটি টাকা। হরতাল অবরোধের কারণে এ খাতে ৩৫-৪০ শতাংশ চাহিদা কমে গেছে। লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০০০ কোটি টাকা।
প্রতিদিন দেশে গড়ে প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ পিস ডিম উৎপাদিত হয় অর্থাৎ সাপ্তাহিক উৎপাদন প্রায় ১০ কোটি ৫০ লাখ পিস। হরতাল-অবরোধজনিত কারণে নষ্ট হচ্ছে ৩০ শতাংশ বা ৩ কোটি ১৫ লাখ পিস ডিম- যার উৎপাদন খরচ প্রায় ২০ কোটি ৪৭ টাকা (প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ ৬ টাকা)। ১৩ সপ্তাহে ক্ষতি প্রায় ২৬৬ কোটি টাকা।
অবশিষ্ট ৭০ শতাংশ ডিম খামারিকে বিক্রি করতে হয়েছে গড়ে প্রায় ৫ টাকা দরে। প্রতিটি ডিমে খামারির লোকসান এক টাকা। সাপ্তাহিক লোকসান প্রায় ২৮ কোটি টাকা। তিন মাসে লোকসান ৩৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ শুধুমাত্র এ খাতে বিগত তিন মাসে লোকসান হয়েছে প্রায় ৬৩০ কোটি টাকা।
প্রতি সপ্তাহে ব্রয়লার বাচ্চা (ডিওসি) উৎপাদিত হচ্ছে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ। হরতাল-অবরোধের কারণে অবিক্রিত থেকে যাচ্ছে প্রায় ৩০ শতাংশ বাচ্চা- যার সংখ্যা প্রায় ৩৬ লাখ পিস এবং উৎপাদন খরচ প্রায় ১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। অর্থাৎ বিগত তিন মাসে ক্ষতি প্রায় ১৬৪ কোটি টাকা।
অবশিষ্ট ৭০ শতাংশ বাচ্চা বিক্রি করে সরাসরি লোকসান গুণতে হচ্ছে বাচ্চা প্রতি গড়ে প্রায় ২০ টাকা হিসেবে। অর্থাৎ বাচ্চা বিক্রি থেকে প্রতি সপ্তাহে লোকসান হচ্ছে প্রায় ১৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। বিগত প্রায় ১৩ সপ্তাহে এ ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২১৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ বাচ্চায় মোট লোকসানের পরিমাণ ৩৮২ কোটি টাকা।
বাণিজ্যিক ব্রয়লার মুরগির মাংসের মাসিক উৎপাদন প্রায় ৬০ হাজার টন। তিন মাসে উৎপাদন ১৮০ হাজার টন। এ খাতে মোট লোকসানের প্রমাণ ৯৭৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশের পোল্ট্রি সেক্টরে প্রতি মাসে ঔষদের বাজার প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। বর্তমানে এ বাজার প্রায় ৬৩ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছে। গত তিন মাসে এ খাতে লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫৮ কোটি টাকা।
অর্থাৎ ডিম, বাচ্চা, মুরগি, ফিড এবং ওষুধ এই খাতগুলোতে বিগত প্রায় তিন মাসের রাজনৈতিক অস্থিরতায় লোকসান হয়েছে প্রায় ৩১৪৫ কোটি টাকা। এর সাথে যুক্ত হয়েছে ব্যাংকের সুদ, লজিস্টিক খরচ, বন্দর ডেমারেজ, গাড়ি ভস্মীভূত হওয়াসহ অন্যান্য লোকসান- যা যোগ করলে মোট লোকসানের পরিমাণ ৪ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়।
বিপিআইসিসির আহ্বায়ক মসিউর রহমান বলেন, ''পোল্ট্রি শিল্প রক্ষায় গণমাধ্যমের সহযোগিতা আজ আমাদের খুব বেশি প্রয়োজন। আমাদের কথা, আমাদের প্রকৃত অবস্থা রেডিও, টিভি, সংবাদপত্রের মাধ্যমে দয়া করে তুলে ধরুন। কারণ পোল্ট্রি শিল্প ধ্বংস হলে দরিদ্র ও বেকারত্ব বাড়বে, গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে, স্বাস্থ্যহীন ও অপুষ্টির শিকার মা ও শিশুর সংখ্যা বাড়বে, খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে, মেধার বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে।''
বিবিপিআইসিসির পক্ষ থেকে প্রতিটি বড় কোম্পানি থেকে কমপক্ষে ১০০জন, মাঝারি কোম্পানি থেকে ৫০জন এবং ছোট কোম্পানি থেকে ২৫জন করে প্রতিনিধি মানববন্ধনে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে তাদের স্ব-স্ব হ্যাচারি মালিক এবং খামারিদের কমপক্ষে ২টি করে মুরগি, কিছু সংখ্যক মুরগির বাচ্চা ও ডিম নিয়ে কর্মসূচিতে অংশ্রগ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment